সহায়ক সেবার ধরন ও উৎস

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র | NCTB BOOK

বর্তমান বিশ্বে শিল্প-বাণিজ্যের অগ্রগতিই জাতীয় উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । পৃথিবীর যেই দেশ এক্ষেত্রে এগিয়ে তারাই প্রকৃতপক্ষে চালকের আসনে আসীন। তাই প্রতিটা দেশ ব্যবসায় ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে । এজন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানান ধরনের ব্যবসায় সহায়ক সেবা প্রদত্ত হচ্ছে। বাংলাদেশে এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সেবা ও তা প্রদানের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে নিম্নে ধারণা দেয়া হলোঃ

সেবার ধরনবাংলাদেশে এর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ

১. উদ্দীপনামূলক সেবা (Stimulatory Service):
একজন সম্ভাব্য উদ্যোক্তাকে ব্যবসায় গঠনে আগ্রহী করতে ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে যে সকল সেবা সুবিধার প্রয়োজন হয় তাকে উদ্দীপনামূলক সেবা বলে। একজন ব্যক্তি তার লব্ধ জ্ঞান ও পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় কী করবে । এ নিয়ে ভাবে। কিন্তু সেই ভাবনা সংঘবদ্ধ হতে সময় নেয়। কী করলে কী | হবে, তার বাস্তবতায় সেটা কতটা করা সম্ভব-এগুলো তার মাঝে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এবং এক ধরনের ভয় ও সংকোচের সৃষ্টি করে। সে সময়ে তাকে ব্যবসায় গঠনে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে, সাহস দিয়ে ও করণীয় নির্দেশ করে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যে ধরনের সেবা দেয়া হয় তা-ই উদ্দীপনামূলক সেবা ।

যুব অধিদপ্তর, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মহিলা অধিদপ্তর, মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা সংস্থা, এনজিও ইত্যাদি ।

২. সমর্থনমূলক সেবা (Supporting service):
একজন উদ্যোক্তা ব্যবসায় গঠনে আগ্রহী হওয়ার পর বাস্তবে তা গঠনে যে ধরনের সেবা সহায়তার প্রয়োজন হয় তাকে সমর্থনমূলক সেবা বলে। ব্যবসায় গঠন করতে চাইলেই তা করা যাবে, নতুন একজন ব্যক্তির পক্ষে তা ততটা সহজসাধ্য নয়। প্রথমেই তার পুঁজির প্রয়োজন পড়ে। শিল্প গড়তে বিভিন্ন সংস্থা থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। ঋণ নেয়ার জন্য প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরি করতে হয়। অবকাঠামোগত সুবিধা পেতে বিদ্যুত, গ্যাস, পানি ইত্যাদি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ে। দোকান করতে চাইলেও পুঁজি ও নানাবিধ সহযোগিতার দরকার হয়। যা সমর্থনমূলক সেবাদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করে। শুধুমাত্র শুরুতেই নয় ব্যবসায়ের বিভিন্ন পর্যায়েও তার প্রয়োজন হয়ে থাকে ।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা, বেসিক ব্যাংক লিমিটেড, কর্মসংস্থান ব্যাংক, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (NGO), বাণিজ্যিক, ব্যাংক, সরকারি লাইসেঞ্জিং কর্তৃপক্ষ, সরকারি । সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ ( রাস্তা পানি, বিদ্যুত, গ্যাস) ইত্যাদি ।

৩. সংরক্ষণমূলক সেবা (Sustaining service):
ব্যবসায় পরিচালনায় উদ্যোক্তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ধরে রাখার জন্য যে ধরনের সেবার প্রয়োজন হয় তাকে সংরক্ষণমূলক সেবা বলে। একজন | ব্যবসায়ী যখন সামনে এগোয় তখন তার উদ্যোগকে সুরক্ষা দিতে, তার প্রচেষ্টাকে আরও স্বার্থক করতে নানাবিধ সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ে। ব্যবসায় ভালো করলে প্রতিষ্ঠান বা পণ্যের নাম ব্রান্ডিং করতে ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে। একজন লেখক, প্রশাসক, গায়ক ইত্যাদি | সৃষ্টিধর্মী কাজে কপিরাইট আইন নিবন্ধনের প্রয়োজন হয়। স্থানীয় বণিক সভার সহযোগিতার দরকার হয়। কৃষি ফার্ম, মৎস ফার্ম ইত্যাদি গড়তে সরকারি বিভিন্ন বিভাগ বা সংস্থার সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ে। যা সংরক্ষণমূলক সেবা হিসবে গণ্য। কর অবকাশ, ভর্তুকি প্রদান ইত্যাদি এ ধরনেরই সেবা ।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, BSTI, পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর, বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, বাংলাদেশ বাণিজ্য কর্পোরেশন, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন, বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি, বাংলাদেশ তত বোর্ড, বাংলাদেশ রেশম বোর্ড, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর ইত্যাদি ।

 

Content added By
Promotion